চুয়াডাঙ্গা জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। এটি বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত ছিল। দেশ বিভাগের পূর্বে এটি পশ্চিম বঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাক্কালে সর্বপ্রথম চুয়াডাঙ্গাকে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঘোষণা করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পরবর্তিকালে নিরাপত্তা এবং কৌশলগত কারণে চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজধানী মুজিবনগরে সরিয়ে নেয়া হয়।
পরিচ্ছেদসমূহ
|
Chuadanga চুয়াডাঙা | |
---|---|
— জেলা — | |
বাংলাদেশে চুয়াডাঙা-এর অবস্থান | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
এলাকা | |
• মোট | বর্গকিলোমিটার ( বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (1991) | |
• মোট | ৯,৮৭,৩৮২ |
• ঘনত্ব | প্রতি বর্গকিলোমিটারে (প্রতিবর্গমাইলে ) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | 25.2% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+6) |
• গ্রীষ্মকাল (ডিএসটি) | বিডিএসটি (UTC+7) |
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪টি উপজেলা রয়েছে। এগুলো হলো:
- আলমডাঙ্গা উপজেলা
- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা
- জীবননগর উপজেলা
- দামুড়হুদা উপজেলা
[সম্পাদনা]ইতিহাস
গ্রীক ঐতিহাসিকদের মতে এ এলাকাতেই বিখ্যাত গঙ্গারিডাই রাজ্য অবস্থিত ছিল। গাঙ্গেয় নামক একটি শহরও এ এলাকায় অবস্থিত ছিল বলে শোনা যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে এ এলাকাটি বেশ কিছু আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল; যেমন: ওহাবি আন্দোলন (১৮৩১), ফরায়েজি আন্দোলন (১৮৩৮-৪৭), সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭), নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯-৬০), খেলাফত আন্দোলন (১৯২০), স্বদেশী আন্দোলন (১৯০৬), অসহযোগ আন্দোলন, সত্যাগ্রহ আন্দোলন (১৯২০-৪০), ভারত ছাড় আন্দোলন (১৯৪২) ইত্যাদি। ব্রিটিশ শাসনাধীনে চুয়াডাঙ্গা নদিয়া জেলার একটি উপজেলা ছিল। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের সময় কৃষ্ণনগর থানা (বর্তমানে নদিয়া জেলার অন্তর্গত) বাদে বাকি অংশ কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় চুয়াডাঙ্গা পাকিস্তান বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সংঘটিত বেশ কিছু প্রাথমিক যুদ্ধের সাক্ষী। এখানে শতাধিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। ২৬ মার্চ ১৯৭১ তারিখে মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম কমান্ড, দক্ষীণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড গঠিত হয়েছিল এ জেলায়, মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং ডাঃ আসহাব-উল-হক জোয়ার্দ্দারের (৭ অক্টোবর ২০১০ তারিখে ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন) নেতৃত্বে । একই দিন সকাল ০৯:৩০ এ বড়বাজার মোড়ে ডাঃ আসহাব-উল-হক জোয়ার্দ্দার দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটিও এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার চুয়াডাঙ্গাকে গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় একশরও বেশি সম্মুখ যুদ্ধের কথা নথিভুক্ত আছে। নথি অনুসারে ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর তারিখে, অর্থাৎ হানাদার বাহিনী কর্তৃক মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পনের ৯ দিন আগে, পাকিনস্তানীদের হাত থেকে চুয়াডাঙ্গা মুক্ত হয়।
যুদ্ধকালীন গণহত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছ- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পেছনের স্থানে, নাটুদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে তিনটি গণকবর, জীবননগরে সীমান্তবর্তী ধোপাখালি গ্রামে, এবং আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের কাছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ ক্যানালের তীরবর্তী স্থানে। যুদ্ধের স্মৃতি ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে দু'টি স্মৃতি স্তম্ভ।
১৯৮৪ সালে কুষ্টিয়া থেকে পৃথক করে চুয়াডাঙ্গাকে স্বতন্ত্র জেলার মর্যাদা দেয়া হয়।
চুয়াডাঙ্গা শহরটি মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এ শহরে ৯ টি ওয়ার্ড এবং ৪১ টি মহল্লা আছে। এটি একটি 'এ গ্রেড' পৌরসভা শহর। পৌরসভা ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলও ১৯৬৫ সাল থেকে কাজ শুরু করে। শহরের আয়তন ৩৬.১২ বর্গ কিলোমিটার। এর জনসংখ্যা ৭২,০৮১; যার মধ্যে পুরুষ ৫০.১৩% এবং মহিলা ৪৯.৮৭%। শহরের জনসংখ্যার ১০০% ই শিক্ষিত।
[সম্পাদনা]
অর্থনীতি
চুয়াডাঙ্গার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত। শ্রমশক্তির ৬৮% কৃষিকাজে, এবং মাত্র ১২% ব্যাবসা বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট। আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৯৪.২০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে ৫৭% কোন না কোন প্রকার সেচ ব্যবস্থার আওতাধীন।
কৃষির পাশাপাশি জেলাটিতে বর্তমানে শিল্পেরও বিকাশ ঘটছে। প্রধান শিল্প কারখানা গুলো হল জামান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ, বঙ্গজ ব্রেড এন্ড বিস্কুট, তাল্লু স্পিনিং মিল্স লিমিটেড, কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ইত্যাদ। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অবস্থিত কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলঅদেশ লিমিটেড (১৯৩৩) বাংলাদেশের বৃহত্তম চিনি কল। কেরু এন্ড কোম্পানির সাথে যে ডিস্টালারিটি আছে তা বাংলাদেশের একমাত্র মদ্য প্রস্তুকারী কারখানা। কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের (Bangladesh Sugar and Food Industries; BSFIC) অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান। BSFIC বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
জেলার পেশার মধ্যে রয়েছে কৃষি ৪০.৩৩%, কৃষিশ্রমিক ২৮.০৮%, দিন মজুর ২.৬৯%, চাকরি ৬.০৮%, পরিবহণ খাত ১.৯১% এবং অন্যান্য ৮.২২%। ব্যবহৃত ভূমির মধ্যে আবাদী জমি ৮৯৪.২ বর্গকিলোমিটার; অনাবাদী জমি ২.৫৪ বর্গকিলোমিটার; একফসলী জমি ১৪.৮০%; দুই ফসলী জমি ৭৩.৩৫%; তিন ফসলী জমি ১১.৮৫%; সেচের আওতাভুক্ত আবাদী জমি ৫৭%। ভূমিস্বত্বের ভিত্তিতে ৩৭% ভূমিহীন, ৪৩% নিম্ন বর্গীয়, ১৮% মধ্যম এবং ২% ধনী; মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ ১,১০০ বর্গমিটার। প্রতি ১০০ বর্গমিটার মানসম্মত জমির বাজারমূল্য আনুমানিক ৮০০০ টাকা।
প্রধান শস্য ধান, পাট, গম, আলু, আখ, বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল, পান এবং কুমড়া। বিলুপ্ত বা প্রায়-বিলুপ্ত শস্যের মধ্যে আছে তিল, তিসি, তামাক, সরিষা, ছোলা, আউশ ধান এবং নীল। প্রধান ফল আম, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপেঁ, পেয়াড়া, পান, নারিকেল এবং কলা।
জেলায় রয়েছে বেশ কিছু মুরগির খামার, মাছের খামার, গরুর খামার ও হ্যাচারি। জীবননগরে অবস্থিত দত্তনগর ফার্মটি এশিয়ার বৃহত্তম কৃষিখামার হিসেবে পরিচিত।
উৎপাদনশীল কলকারখানার মধ্যে রয়েছ তুলার কল, চিনি কল, বিস্কুট কারখানা, স্পিনিং মিল, টেক্সটাইল মিল, এ্যালুমিনিয়াম কারখানা, ওষুধ তৈরির কারখানা, চালকল, চিরার কল, তেল কল, আটা কল, বরফ কল, করাত কল এবং ওয়েল্ডিং কারখানা। কুটির শিল্পের মধ্যে রয়েছে বয়নশিল্প, বাঁশের কাজ, স্বর্ণকার, কর্মকার, কুম্ভকার, ছূতার, তন্তুবায়, দরজি ইত্যাদি।
হাটবাজারের সংখ্যা ৮০; উল্লেখযোগ্য হল চুয়াডাঙ্গা, ডিঙ্গেদহ, আলমডাঙ্গা, মুন্সিগঞ্জ, নীলমণিগঞ্জ, গকুলখালি, আসমানখালি, ডুগডুগি, জীবননগর, শিয়ালমারি, দামুড়হুদা, ভালাইপুর এবং বড়বাজার।
উল্লেখযোগ্য মেলার মধ্যে রয়েছে মেটেরি মেলা, গড়াইটুপি, বারুনি এবং গঙ্গাপূজা।
প্রধান রপ্তানী পণ্যগুলো হল ধান, পাট, পান, বিস্কুট, চিনি, তামাক, আখ, খেজুরের গুড়, পান, সুপাড়ি, আম, কুমড়া, কাঁঠাল এবং কলা।
এখানে প্রায় ১৮ টি এনজিও কাজ করছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জন কল্যাণ সঙ্ঘ (১৯৮৪ সালে কয়ড়াডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠিত), ওয়েভ ফাউন্ডেশন ইত্যাদি।
[সম্পাদনা]চিত্তাকর্ষক স্থান
পুলিশ পার্ক (চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পুলিশ সুপার এর কার্যালয় সংলগ্ন)
শিশু স্বর্গ (ফেরি ঘাট রোড)
নাটুদহের আট কবর (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবর)
দর্শনার কেরু সুগার মিলস এন্ড ডিস্টিলারি
চুয়াডাঙ্গার প্রসিদ্ধ স্থাপনাসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো তিন গম্বুজবিশিষ্ট চুয়াডাঙ্গা বড় মসজিদ, ঘোলদাড়ি মসজিদ (১০০৬ খ্রিস্টাব্দ), ঠাকুরপুর মসজিদ, শিবনগর মসজিদ, জামজামি মসজিদ, হাজারদুয়ারি স্কুল (দামুড়হুদা), কার্পাসডাঙ্গা নীলকুঠি, ঘোলদাড়ি নীলকুঠি ইত্যাদি।
কার্পাসডাঙ্গা একটি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গ্রাম, যেটি পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। স্থানীয় ব্যাবসাকেন্দ্র হিসেবে এটি বহু বছর ধরে সুপরিচিত ছিল। ভৈরব নদীর তীরবর্তী বাজারটি মুঘল আমল থেকে ব্রিটিশ আমল পর্যন্ত অন্যতম প্রাচীন বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে বিখ্যাত ছিল। ভৈরব তীরবর্তী নীলকুঠিটিও কালের সাক্ষ বহন করছে। এই এলাকায় নীলচাষ পরিচালনা করার জন্য এটি তৎকালীন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্যতম প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হত। নীলকুঠিটির মূল অংশটি আজ[কখন?] ধ্বংসপ্রায়। অপর অংশটি ১৯৮৩ সালে সংস্কার করে বালিকা বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়েছে। গ্রামটির প্রাচীন নাম ছিল 'নিশ্চিন্তপুর'। নীলকুঠি এলাকায় একটি সমাধিক্ষেত্র রয়েছে যেখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শ্বেতাঙ্গ কমকর্তাদেরকে সমাহিত করা হতো। এমনই একজন শ্বেতাঙ্গ অত্যাচারী নীলকর ছিলেন মি. বার্কোশ; যার নির্মমতার কথা প্রবাদতুল্য।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল স্বদেশী আন্দোলনের সময় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম এ গ্রামে অবস্থান করেছিলেন। স্বদেশী আন্দোলনের সাথে যুক্ত অনেকের বংশধররা আজো গ্রামটির পশ্চিম প্রান্তে খ্রিস্টান পাড়ায় বসবাস করে। কাজী নজরুল ইসলামের ব্যাবহৃত জিনিসপত্র নিয়ে গ্রামের হাইস্কুলে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গ্রামে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক খ্রিস্ট ধর্মবলম্বীর বাস। গ্রামে দু'টি বড় গীর্জা রয়েছে; একটি ক্যাথলিক ও অপরটি প্রোটেস্ট্যান্ট। খ্রিস্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত একটি বিখ্যাত হাসপাতালও রয়েছে এখানে।
ঘোলদাড়ি জামে মসজিদঃ মসজিদটির নির্মানকাল ১০০৬ খ্রিস্টাব্দ। ওমর শাহ নামক এক দরবেশ এটি নির্মান করেন। আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি গ্রামে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদটিতে এখনোও নামাজ আদায় হয় ।
তিয়রবিলা বাদশাহী মসজিদঃ আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নে তিয়রবিলা গ্রামে এর অবস্থান । নাটরের জমিদার রানী ভবানী এই মসজিদটি সংস্কার করেন এবং রক্ষণা বেক্ষণের জন্য ২৫ একর জমি ওয়াকফো করে দেন ।
আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনঃ এটি ব্রিটিশ আমলে নীলকুঠি হিসেবে ব্যবহৃত হত।
হযরত খাজা মালিক উল গাউস (রঃ)এর মাজার/গড়াইটুপি অমরাবতী মেলাঃ
সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গড়াইটুপি গ্রামে প্রতিবছর ৭-১৪ আষাঢ় বসে ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গড়াইটুপি অমরাবতী মেলা।এ মেলায় আয়োজন করা হয় জীবজন্তুর সার্কাস, যাত্রাপালা, পুতুলনাচ। আরও থাকে কাঠ, বাঁশ, বেতের দোকান, মিষ্টির দোকান, শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনার দোকানসহ আকর্ষণীয় সব আয়োজন। ধর্মপ্রচারক খাজা মালিক-উল-গাউস (র.) এর মৃত্যুদিবস ৭ আষাঢ় বলে এ দিনেই মেলাটি শুরু করা হয় বলে জানা যায়।
গড়াইটুপি গ্রামের নির্জন মাঠ মোকামতলায় আস্তানা গড়ে তোলেন পারস্য থেকে আসা ধর্ম প্রচারক খাজা মালিক-উল-গাউস (র.)। এ সময় কালুপোলের হিন্দুরাজা গোবিন্দ তাঁকে অনুরোধ করেন ধর্মপ্রচার বন্ধ করার জন্য। কিন্তু তিনি পাল্টা হুমকি দিলেন ধর্মপ্রচার বন্ধ হবেনা, বরং রাজাকে দেয় খাজনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।তাদের মধ্যে চুক্তি হয় আসন্ন সংঘর্ষে যে জিতবে তাকে তার স্থান ত্যাগ করতে হবে- ধর্মপ্রচারকের আস্তানা অথবা রাজার প্রাসাদ।রাজা গোবিন্দ পরাজিত হন। পরবর্তিকালে মালিকশাহর মৃত্যু হলে তাঁকে আস্তানাতেই দাফন করা হয়। আস্তানাটিতে মনোবাঞ্ছা পূরণের লক্ষ্যে আজও বহু পূণ্যার্থীসমাগম হয়।
কথিত আছে আনুমানিক ১৯৭৮ সালের বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে প্রচণ্ড খরায় মাঠঘাট শুকিয়ে গিয়েছিলো। জেলার অন্যান্য জায়গায় বৃষ্টি হলেও তিতুদহে কোনো বৃষ্টি হচ্ছিলো না। রাতে গায়েবি আওয়াজে গ্রামবাসী জানতে পারে এলাকায় একটি পাথর আছে। পাথরটি মাজারের নিকট রাখলে এলাকার মঙ্গল হবে। এলাকাবাসী পাথরটি চিত্রানদী থেকে উদ্ধার করে খাজা মালিক-উল-গাউস (র.) মাজারে রেখে কান্নাকাটি করলে তিতুদহ ইউনিয়নে বৃষ্টি শুরু হয়। মাজারের উত্তর দিকে একটি পুকুর আছে সেখানে প্রায় প্রতিদিনই মানুষ মনেরবাসনা পূরণের জন্য গোসল করে থাকে। [১]
[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে