পটভূমি:
অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বর্ধিত চাহিদা মেটাতে না পারায় সরকার বেসরকারী বা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়। যেসব শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য হয়ত ভারত বা অন্য কোন দেশে যেত তাদের অনেকে এখন দেশের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই পড়ছে। এভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে বলেও বলছেন অনেকে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেয়। সে সময় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন নামে একটি আইনও পাশ করা হয়। এই আইন বলে প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ২০১০ সালে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন একটি আইন প্রবর্তন করা হয়। এখন মোট ৫১টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে বাংলাদেশে।
মান নিয়ন্ত্রণ ও অনুমোদন
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সামগ্রিকভাবে উচ্চ শিক্ষার বিষয়টি তদারক করে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয়াসহ মান বজায় রাখার কাজটি তদারক করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের।
কিছুটা দেখেশুনে এবং খোঁজখবর নিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরামর্শ দিয়ে থাকে মঞ্জুরি কমিশন। শিক্ষার মান নিশ্চিত করা এবং নিজস্ব জমিতে অবকাঠামো তৈরি করার কারণে আটটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে অলিখিতভাবে সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাঁচ বছরের মধ্যে নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরি করতে হয়। বাকি ৪১ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এখন পর্যন্ত নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। কয়েকেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ বছরের সময় এখন পর্যন্ত আছে। ব্যর্থতা সত্ত্বেও নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরিতে কিছুটা পদক্ষেপ নেবার কারণে ২১টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে লাল সংকেত না দিয়ে হলুদ সংকেত দেয়া হয়েছে। আর ২২ টি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ক্যাম্পাস তৈরির কোন উদ্যোগই নেয়নি। মঞ্জুরি কমিশনের মতে এদের সে আগ্রহও নেই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল: দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়, লিডিং ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আশা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি, গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। এসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিকাংশই গড়ে উঠেছে ভাড়া করা বাড়িতে। অনেক ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক এলাকায় কিংবা মার্কেট এলাকায় কোন ভবনের ফ্লোর ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। মঞ্জুরি কমিশন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে।
নিজস্ব ক্যাম্পাস আছে এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা দিয়ে মঞ্জুরি কমিশনের প্রশংসাপাওয়া আটটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।